
হাসিনা এখন জাতিসংঘ ও সারাবিশ্ব ঘোষিত বিশ্ব খুনি। তাকে আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। এখন শুধু তাকে ও তার দলের খুনি নেতাকর্মীদেরকে মানবতাবিরোধী আইনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আজ (১৬ ফেব্রুয়ারি) রবিবার বিকেলে ফেনীর ঐতিহাসিক মিজান ময়দানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ফেনী জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ আদালত গঠিত হয়েছে। এ আদালতে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী, শহীদ পরিবারের সদস্য ও সারাদেশের মানুষ মামলা দায়ের করেছে। এখন প্রয়োজন এসব মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।
সালাহউদ্দিন বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ বলছে সারাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের সরাসরি নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জুলাই আন্দোলনে নিরীহ ছাত্রদের উপর অমানসিক নির্যাতন ও গণহত্যা চালিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা দাবি করেছিলাম সংবিধানের ৪৭ ধারা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পলায়নের ইতিহাস। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ নেতারা যুদ্ধ না করে ভারতে পালিয়েছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিমানে করে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার জন্য শেখ হাসিনা ও তার দোসররা অনেক দূরে বসে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু আমি বলতে চাই দিল্লি অনেক দূর। শেখ হাসিনা, দিল্লি তোমার কাছে বটে কিন্তু বাংলাদেশ অনেক দূরে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাকশাল প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। আমরা জানতাম বাকশালী শেখ হাসিনার পতন হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। ৫ আগস্ট হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে অবশেষে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেল, একটি নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলো।
ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য আবু তালেব, মশিউর রহমান বিপ্লব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক রফিকুল আলম মজনু। এছাড়াও জনসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী, এম এ খালেক, গাজী হাবীব উল্লাহ মানিক, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঞা, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন খন্দকার, সদস্য সচিব নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। বেশি সংস্কার সংস্কার করবেন না। সংস্কারের চেয়ে সংসার গুরুত্বপূর্ণ। নিত্যপণ্যের দাম কমান। আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখুন।
কয়েকটি দল আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাইছে। তাদের মতলবটা কী? ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন করতে আরো এক বছরেরও বেশি সময় লেগে যাবে। এতে নির্বাচন বিলম্বিত হবে। আবার আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। আনুপাতিক হারে নির্বাচন বিএনপি মানবে না। তিনি অবিলম্বে নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দেশকে নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।